what diseases are caused by rats

ইঁদুর সম্পর্কে কয়েকটি তথ্যঃ ইঁদুর থেকে কি কি রোগ হয়?

বাংলাদেশের কাউকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় যে কখনো তাদের কাপড়-চোপড় বা কোনো তার ইঁদুর কেটে ফেলেছে কিনা, তাহলে বেশিরভাগের উত্তরই হবে হ্যাঁ। ইঁদুর এমন একটি প্রাণী যেটির আক্রমণ থেকে খাবার দাবার, কাপড়চোপড় এমনকি বৈদ্যুতিক তারও রক্ষা করা সম্ভব হয় না। ধারালো দাঁতের অধিকারী অসম্ভব চালাক এই প্রাণীটি কিন্তু বিভিন্নরকম স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিও বহন করে থাকে। আজকের লেখায় আমরা জানবো ইদুর সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য যেমন , ইঁদুর কোথায় থাকে, ইঁদুর কি কি খায়, ইঁদুর কত বছর বাঁচে, ইঁদুর থেকে কি কি রোগ হয় ,ইঁদুর কামড় দিলে কি হয় ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত।

ইঁদুর সম্পর্কে কিছু তথ্য

চলুন লেখার শুরুতেই ইদুর সম্পর্কে সাধারণ কিছু তথ্য জেনে নেয়া যাক। যদি জীববিজ্ঞানের ভাষায় বলতে যাই, তাহলে ইঁদুর হলো অ্যানিমালিয়া রাজ্যের ম্যামিলিয়া শ্রেণীভুক্ত একটি প্রাণী। বর্তমানে পৃথিবীতে প্রায় ৬০ প্রজাতির ইদুর দেখতে পাওয়া যায়।
এক একটি ইঁদুর আকৃতিতে সাধারণত ৫ ইঞ্চি কিংবা তার চাইতেও বড় হয়ে থাকে। পৃথিবীতে ইঁদুরের আগমন হয়েছে আজকে থেকে প্রায় কয়েকশো বছর আগে। স্বভাবে নিশাচর এই প্রাণীটি তার ধারালো দাঁতের সাহায্যে যে কোনো কিছুই কেটে ফেলতে পারে।

ইঁদুর কোথায় থাকে?

এবার আসা যাক ইঁদুর কোথায় থাকে সে প্রশ্নটির উত্তরে। আসলে ইঁদুর এমন একটি প্রাণী যেটিকে আপনারা পৃথিবীর সমস্ত জায়গাতেই দেখতে পাবেন। ইঁদুরের সবচাইতে পরিচিত দুটি প্রজাতিকে ব্রাউন র‍্যাট ও হাউজ র‍্যাট নামে ডাকা হয়ে থাকে। এ দুটি প্রজাতির মধ্যে ব্রাউন র‍্যাট বসবাসের জন্য নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া পছন্দ করে এবং হাউজ র‍্যাট গরম আবহাওয়া রয়েছে এমন অঞ্চল পছন্দ করে। তবে সাধারণভাবে মানুষের আবাসস্থল যেখানে রয়েছে সেখানেই ইঁদুর দেখতে পাওয়া যায়।
ইঁদুর স্বভাবে একটি দলবদ্ধ ও সামাজিক প্রাণী। ইঁদুরের এক একটি দলকে ইংরেজিতে প্যাক বলা হয়। সাধারণত যখন একটি পুরুষ ও একটি স্ত্রী ইঁদুর কোনো দল ছাড়া নিজেরা কোথাও থাকতে শুরু করে, সেখান থেকে একেকটি ইঁদুরের দল বা প্যাক সৃষ্টি হয়। এই ইঁদুরের এক একটি দলে সবচাইতে বড় আকৃতির পুরুষ ইঁদুরটি দলনেতার ভূমিকা পালন করে। তাদের এ দলবদ্ধ স্বভাবের কারণেই কারো বাড়িতে যখন একবার ইঁদুরের উপদ্রব দেখা যাওয়া শুরু করে, তখন সে উপদ্রব যত দিন যায় ততই বাড়তে থাকে।

ইঁদুর কি কি খায়?

এবার আসি ইঁদুর কি কি খায় সেটি নিয়ে। সত্যি বলতে যদি তাদের খাবারের অভাব হয়, তাহলে সামনে যেটি পায় তারা সেটিই খেয়ে থাকে। তাই ইঁদুরের খাবারের তালিকায় মোটামুটি বেশ ভালই বৈচিত্র্য রয়েছে। যেমনঃ যদি ইঁদুর ফসলের মাঠে কিংবা বনে বাদাড়ে থাকে, সেক্ষেত্রে তারা ফলের বিচি, ফল, শাকসবজি ইত্যাদি খেয়ে থাকে।
আবার যদি আপনার বাড়িতে ইঁদুরের আক্রমণ হয়, তাহলে তারা টেবিলে রাখা খাবারের বাটি থেকে যেমন খাবার খেয়ে নিতে পারে, তেমনি ভাবে কিন্তু ময়লার বালতি থেকেও খাবারের ফেলা দেয়া অংশ তুলে খেতে পারে। অর্থাৎ ইঁদুর কি কি খায় সেটি নির্ভর করে এটির আশেপাশে খাবারের কেমন পরিমান জোগান রয়েছে তার ওপর।

ইঁদুর কত বছর বাঁচে?

ইঁদুর কত বছর বাঁচে সেটি জানার আগে চলুন জেনে নেয়া যাক ইঁদুরের জীবন চক্র সম্পর্কে কয়েকটি তথ্য। এক একটি স্ত্রী ইঁদুর প্রতিবছর ১০ থেকে ১২ বার বাচ্চা দিতে সক্ষম। জন্মানোর পর প্রতিটি ইঁদুর অন্ধ থাকে এবং তাদের দেহে কোন লোম থাকে না। ইংরেজিতে এই লোমহীন এই অবস্থাটিকে পিংকি বলা হয়।
জন্মের দুই সপ্তাহ পরে থেকে ইঁদুরের বাচ্চাগুলো ধীরে ধীরে দেখতে শুরু করে এবং তাদের দেহে লোম গজানোও শুরু হয়। এই প্রাণীটির পরিণত বয়সে পৌঁছাতে সময় লাগে মাস দুয়েকের মত। এক একটি ইঁদুর গড়ে দুই থেকে তিন বছরের মতো বাঁচে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এগুলোর মৃত্যু হয় কোন রোগ কিংবা ইঁদুর মারার ওষুধের কারণে।

ইঁদুর থেকে কি কি রোগ হয়?

সাধারণত ইঁদুরের লালা, মূত্র, লোমের পাশাপাশি এটির কামড় থেকেও আমাদের দেহে বিভিন্ন রোগজীবাণু ছড়ায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইঁদূর তাদের সাথে প্রায় ৬০ ধরণের রোগের জীবাণু বয়ে বেড়ায়। তাই যদি ইঁদুরে মুখ দেয়া খাবার খেয়ে থাকেন, সেখান থেকেও কিন্তু আপনাদের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যাবে৷
ইঁদুরের মাধ্যমে ছড়ায় এমন কয়েকটি রোগের নাম হলো:

১. হান্টাভাইরাস

ইঁদুরের মাধ্যমে ছড়ানো এই রোগের আলাদা করে কোনো চিকিৎসা বা টিকার ব্যবস্থা নেই। রোগটি থেকে মানুষের মৃত্যুও হতে পারে। এটির লক্ষণগুলো হলো জ্বর, বমি, মাসলে ব্যথা, ক্লান্তি ইত্যাদি।

SHOP AT CHAYA PEST CONTROL

Cockroach Killer

4.8/5

70 TK

Rat Killer

4.6/5

200 TK

Bed Bug Killer

5/5

750 TK

Fly Killer

4.6/5

80 TK

২. র‍্যাট বাইট ফিভার

যখন কোনো মানুষ ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত ইঁদুরের কামড় খায়, তখনই তার র‍্যাট বাইট ফিভারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। মাথাব্যথা, বমি, র‍্যাশ, মাংশপেশিতে ব্যথা এই রোগের প্রধান উপসর্গ।

৩. লিম্ফোসাইটিক কোরিওমেনিঞ্জাইটিস

এই রোগটি ইঁদুরের হাউজ র‍্যাট প্রজাতি থেকে মানুষের মধ্যে ছড়ায়। রোগের প্রথমদিকে মাথাব্যথা, মাংশপেশিতে ব্যথা, ক্লান্তি অনুভূত হলেও পরেরদিকে নিউরনের নানাবিধ সমস্যা অনুভূত হতে থাকে।

৪. টুলারেমিয়া

এই রোগটি মূলত একধরণের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ যা এই ব্যাকটেরিয়া আক্রান্ত ইঁদুর মানুষকে কামড়ানোর মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে থাকে। অনেক সময় এই ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত ইঁদুরের সংস্পর্শে এলেও মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়। ক্ষেত্রবিশেষে এই রোগ মৃত্যুর কারণও হতে পারে।

৫. প্লেগ

ইঁদুরের মাধ্যমে ছড়ানো সবচাইতে বিধংসী রোগের নাম হলো প্লেগ। অতীতে এই রোগে বহু মানুষ মারা যেতো।
এগুলো ছাড়াও ইঁদুরের কামড় থেকে অ্যালার্জি, টাইফয়েড কিংবা বন্য ইঁদুর কামড়ালে সেখান থেকে জলাতঙ্ক রোগ হতে পারে।

ইঁদুর কামড় দিলে কি হয়?

ইঁদুর কামড়ালে প্রথমত কামড়ের স্থান ফুলে লাল হয়ে যায় এবং সেখানে চুলকানিও দেখা যায়। সাথে জ্বর, মাথাব্যথা ইত্যাদি স্বাস্থ্যসমস্যাও দেখা যেতে পারে৷ যদি কোনোভাবে কামড়ের স্থানে ইনফেকশন হয়, তাহলে দীর্ঘমেয়াদী জটিলতা তৈরি হতে পারে।
যদি আপনাকে ইঁদুর কামড়ায়, তাহলে প্রাথমিক পর্যায়ে কামড়ের স্থানটি পানি ও সাবান দিয়ে ভালোমতো ধুয়ে তারপর যেকোনো ব্র‍্যান্ডের অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম লাগিয়ে নিন৷ যদি কামড়ের স্থানে বেশি চুলকানি ও জ্বালাপোড়া হয়, তাহলে খুবই দ্রুত একজন রেজিস্টার রেজিস্টার্ড ডাক্তারের পরামর্শ নিন। এছাড়াও পরামর্শ থাকবে একটি টিটি টিকা নেয়ার। আর যদি বন্য ইঁদুর কামড়ে থাকে, তাহলে জলাতঙ্ক থেকে রক্ষা পেতে র‍্যাবিস রোগের ভ্যাকসিন নিতে হবে।
এটুকুই ছিলো আজকের আলোচনা। আশা করি ইঁদুর সম্পর্কে আপনারা অনেককিছু জানতে পেরেছেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top