বেড বাগ কিংবা ছারপোকা বাংলাদেশের সবচাইতে পরিচিত পোকাগুলোর মধ্যে একটি। আমাদের বাড়ি, অফিস, দোকানপাট ইত্যাদি সবখানেই এ পোকার উপদ্রব কম বেশি লক্ষ্য করা যায়। ছারপোকা সাধারণত কামড়ানোর জন্য রাতের সময়টিকে বেছে নিয়ে থাকে। এই পোকার প্রধান খাদ্য হলো মানুষের রক্ত। যদি রক্ত পান করার প্রয়োজন পড়ে, তাহলে রাত কেন, দিনের বেলাতেও ছারপোকা মানুষকে কামড়ে থাকে।
তবে এক্ষেত্রে আশার কথা এই যে, সত্যি বলতে ছারপোকার কামড় একেবারেই বিপজ্জনক নয়। ছারপোকা পরজীবী ধরনের প্রাণী। এ পোকার কামড় থেকে কোন রোগের জীবাণুই মানবদেহে প্রবেশ করে না। তাছাড়া এ পোকার কামড় সেভাবে বিষাক্তও নয়৷ তবে এ পোকার কামড় থেকে কিছু স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি দেখা দিতে পারে। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক ছারপোকার ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে।
০১. ছারপোকা কামড়ালে কামড়ের স্থানটি লাল হয়ে ফুলে যায়৷ এ কামড়ের স্থানটিতে সাধারণত বেশ চুলকানিও হয়। যদি এ স্থানটি জোরে চুলকানো হয়, তাহলে সেখানে ছিলে যেতে পারে। এ ছিলে যাওয়া অংশের মাধ্যমে যদি কোন ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু আমাদের দেহে প্রবেশ করে, তাহলে সেখান থেকে ইনফেকশন হওয়ার ভয় থেকে যায়৷
০২. যাদের পোকামাকড়ের কামড় থেকে অ্যালার্জি হয়, ছারপোকা কামড়ালে তারা অ্যালার্জিক রিয়াকশনের সম্মুখীন হতে পারেন। শুধু তাই নয়, অনেকের রিয়াকশন হিসেবে শ্বাসকষ্টও দেখা দেয়।
০৩. যাদের বাড়িতে ছারপোকার উপদ্রব অনেক বেশি, তারা রাতে পোকার কামড়ে ঠিকমত ঘুমাতে পারেননা। এতে করে পরদিন তারা তাদের কাজে ঠিকমতো মনোযোগ দিতে পারেন না এবং কাজ করার মনোবলও তুলনামূলকভাবে অনেকটা কমে যায়। এই ঘুমের সমস্যা ছারপোকার একটি অন্যতম ক্ষতিকর দিক। বিশেষ করে যারা মেসে থাকেন, তারা এই সমস্যাটির সম্মুখীন বেশি হন।
এগুলো ছাড়াও কিছু কিছু ক্ষেত্রে ছারপোকার কামড় থেকে রক্তস্বল্পতা কিংবা জ্বরের মতো সমস্যা হতে পারে৷ আশা করি আপনারা বুঝতে পারছেন ছারপোকার কামড় সেরকম ভয়াবহ কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি না করলেও যদি বাড়িতে এ পোকার উপদ্রব হয়, তাহলে সে উপদ্রব থেকে যত দ্রুত সম্ভব নিষ্কৃতি পাওয়া যায় ততই ভালো।
বাড়ি থেকে ছারপোকা তাড়াতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কোন বিকল্প নেই। পুরো বাড়ি তো পরিষ্কার রাখতেই হবে, পাশাপাশি বিছানার চাদর, লেপের কভার, মশারি ইত্যাদি নিয়মিত গরম পানির সাহায্যে ধুয়ে ফেলতে হবে। এর পাশাপাশি তোষক, জাজিম কিংবা যদি কোন কাঠের পুরাতন আসবাবপত্র থেকে থাকে, সেগুলো সময় করে কিছুদিন পর পর রোদে দিতে হবে।
একই সাথে নিজের কাপড়চোপড় এমনভাবে সংরক্ষণ করতে হবে যাতে করে সেখানে কোনো পোকামাকড় প্রবেশ করতে না পারে। এগুলোর পরেও যদি দেখেন ছারপোকার সংখ্যা কোনোভাবেই কমছে না তাহলে ছারপোকা মারার জন্য ভালো মানের ঔষধ ব্যবহার করুন।